ইলুমিনাতির লোগতে পিরামিডের ছবি থাকে কেন?



লেখক ঃ  Rafat Nur

ইলুমিনিতি নিয়ে অনেকের মাঝেই ভুল ধারনা রয়েছে, অবশ্য এতে তাদের দোষ নেই কারন ইলুমিনিতি নিজেই ২২ শত ভিন্ন ভিন্ন তথ্য নিজেদের বেপারে অনলাইনে ছড়িয়ে রেখেছে যাতে মানুষ বিভ্রান্ত হয়!

ঘটনার শুরু বহু বছর পুর্বে, সোলাইমান আঃ এর সময়ে।
আমি নিজের ভাষায় বিষয়টি তুলে ধরার চেস্টা করবো।

পুর্বেই বলে রাখি মুসা আঃ উপর নাযিল হওয়া গুরুত্বপুর্ন ১০ টি আদেশ একটি নিরাপদ বাক্সে সংরক্ষন করা হয়েছিলো, যা টেন কমান্ড নামে ইতিহাসে পরিচিত! এই দশটি আদেশ দুটি পাথরের টুকড়ার উপর খোদাই করে লিখিত হবার পরে স্বর্নের পাতে মোড়ানো একটি বাক্সে সংরক্ষন হচ্ছিলো যা ইতিহাসে আর্ক অফ দা কোভান্যান্ট নামে পরিচিত! জনশ্রুতি রয়েছে এই আর্ক অফদা কোভান্যান্ট যে জাতীর হাতে থাকবে সে জাতী পৃথিবীতে রাজ করবে, কারন এই আর্ক অফ দা কোভান্যান্ট এর রয়েছে ঐশ্বরিক শক্তি ও ক্ষমতা !


সোলাইমান আঃ সৃস্টিকর্তা হতে আদিস্ট হলেন একটি সুরক্ষিত উপসানলয় প্রস্তুত করে তার মধ্যে আর্ক অফদা কোভান্যান্ট সংরক্ষন করার এবং সৃস্টি কর্তা হতে উপাসনালয় গৃহটি নির্মানের নকশা প্রেরন করা হযরত সোলাইমান আঃ এর কাছে!

এটি কোন সাধারন নকশা ছিলো না! গৃহনির্মান এর তৎকালীন অনেক নামজাদা ইঞ্জিনিয়ার নকশার বক্তব্য উদ্ধার করতে ব্যার্থ হলে, হযরত সোলাইমান আঃ তার এক বন্ধু মারফত মিশরের পিরামিড নির্মাতাদের একজন ইঞ্জিনিয়ার হিরাম আবিফকে আমন্ত্রন জানালেন !

হিরাম আবিফ সহ আরো কিছু ব্যাক্তি তৎকালীন সময়ে জনপ্রিয় নির্মান শ্রমিক বা ইঞ্জিনিয়ার ছিলেন যারা বেতন ভুক্ত না হয়ে কন্টাকচুয়াল ভাবে নির্মানের চুক্তিতে কাজ করতেন, এজন্য তাদের ফ্রি মেসন বলা হতো ! *** লেখার এই অংশটি গুরুত্বপুর্ন

ফ্রি মেসন হিরাম আবিফ জেরুজালেমে আগমন করে হযরত সোলাইমান আঃ হতে নকশাটি সংগ্রহ করে গবেষনা করে বুজলেন এটি কোন সাধারন নকশা নয় ! এই নকশা অনুযায়ী উপাসনালয় নির্মান করতে হলে কেবল মাত্র নির্মান বিষয়ক ইঞ্জিনিয়ারিং জ্ঞান যথেস্ট নয়! তাই তিনি সৃস্টি কর্তার এবাদত সাধনায় মশগুল হয়ে রইলেন যাতে নকশার নির্মান কৌশল বুঝতে পারেন। এভাবে বছর দশেক সময় নিয়ে তিনি অবশেষে কাজে হাত দিলেন ! কাজ এগিয়ে চললো পুরোদস্তুর !

দশ বছরের সাধনায় হিরাম আবিফ কেবল মাত্র উপসানালয়ের নকশার ধারনাই পান নাই তিনি আরো নানাবিধ ঐশ্বরিক শক্তিও অর্জন করেন!
হিরাম আবিফের সহচর আরো কয়েকনজন ফ্রি মেসন ইঞ্জিনিয়ার বিষয়টা লক্ষ্য করলো ! তারা হিরাম আবিফের নিকট অই সকল ঐশ্বরিক শক্তি হাত বদল করে তাদের কাছে দিতে দাবী জানালে হিরাম আবিফ অস্বিকৃতি জানায়, কারন ঐশ্বরিক এই শক্তি প্রভুর সাধনায় অর্জন করতে হয়, এটা হাত বদল করার মতো সম্পদ নয়। মুর্খ ফ্রি মেসন ইঞ্জিনিয়ার রা হিরাম আবিফের বক্তব্য না বুঝে তাকে অপহরন করে , এবং অত্যাচারের মুখে শক্তি দাবী কার চেস্টা করলে আহত হিরাম আবিফ মারা যান !

খবর পেয়ে হযরত সোলাইমান আঃ হিরাম আবিফকে উদ্ধার করতে এলেন এবং দৃবৃত্তরা পালিয়ে গেলো ! তারা নানা দেশে ঘুরে ঘুর নির্মান শিল্পের পেশায় যুক্ত রইলো, আর এরাই সেই যুগ যুগ ধরে ফ্রি মেসন নামে বর্তমানেও পৃথিবীতে রয়ে গেলো বংশপরাম্পরায় !

ফ্রি মেসনরা অনেক শক্তিশালী, টাকা পয়সা ক্ষমতার কমতি নেই! বিভিন্ন দেশের সরকার প্রধান ও রাজনিতীতেও তারা প্রভাব বিস্তার করে ! পৃথিবীতে ছড়িয়ে আছে তাদের অফিস, এমনকি ঢাকার পল্টনেও তাদের অফিস ছিলো যা ৭১ এর যুদ্ধের পরে তারা পরিত্যাগ করলেও তাদের লোগো সম্বলিত ভবন এখনও দেখা যায় !

পৃথিবীতে নিয়ন্ত্রন করার জন্য তারা অনেক গুলো ভাগে ভাগ হয়ে বিভিন্ন সেক্টর এ প্রভাব বিস্তার করে থাকে। ব্যবসা বানিজ্য, অর্থনিতী, রাজনিতী,যুদ্ধ,বিজ্ঞান,চিকিৎসা, ধর্ম সহ সকল বিষয়ে তারা তাদের প্রভাব খাটাতে চেস্টা করে থাকে!

এইসকল কাজ করার জন্য তাদের বিশেষ কিছূ বাহিনীর প্রয়োজন হয়, গোলযোগ সৃস্টি অথবা এলিট ফোর্স হিসেবে তাদের যে দলটি কাজ করে সেইটাই হলো ইলুমিনিটি ! অনেকেই ভেবে থাকেন ফ্রি মেসন আর ইলুমিনিটি ভিন্ন গোষ্ঠি, মুলত তারা ডিপার্টমেন্ট ভিন্ন হলেও ইলুমিনিতিরা ফ্রি মেসনদের অধীনে কাজ করে ।

আর সে জন্যই পিরামিড বা কম্পাস এক চোখ এমন ডিজাইনের লোগো ইলুমিনিতি ব্যবহার করে থাকে। উপরের ইতিহাসটি মনোযোগ দিয়ে পড়লে বুঝবেন, ফ্রি মেসনারীদের উৎপত্তির ইতিহাসে পিরামিড নির্মান একটি গুরুত্বপুর্ন পয়েন্ট, আর এক চোখা ইলুমিনিতি তাই পিরামিডকে তাদের লোগোতে যুক্ত করেছে ।কারন তারা ফ্রি মেসনদের অধীনস্ত দল। সিম্বলে এক চোখ মানে হলো তাদের একক শাসন ব্যবস্থা। G1 নামে আরো একটি সংস্থা রয়েছে যারা ইলুমিনিতির মতোই ফ্রি মেসনদের অধিনে কাজ করে , তাদের কাজ ব্যবসা বানিজ্য।

আমার লেখার তথ্যগুলো সম্পুর্ন নয় এর কারন হলো, এই বিষয়ে আমার কাচে থাকা পুস্তক সমুহ আমি হারিয়ে ফেলেছি, তারপরও আরো কিছূ সুত্র আমি উল্লেক করতে চাচ্ছি না নিরাপত্তার স্বার্থে। তথ্যগুলো কেমন লাগলো কমেন্ট করে জানাবেন।

যদিও আমি দেশিয় প্রাচীন ইতিহাস নিয়ে লিখে থাকি, কিন্তু আজ দেখলাম একজন গুরুত্বপুর্ন ব্যাক্তি ইলুমিনিতি নিয়ে ভুল ইতিহাস আলোচনা করছেন তাই সংক্ষেপে সঠিক ইতিহাসটি তুলে ধরার চেস্টা করলাম।